নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ভোটের দিন সকালে নিপুণের কাছে ২টা চুমু চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন চিত্র নায়িকা নিপুণ। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেলের দুইজন নারী সদস্য শাহনুর ও জেসমিনের সামনেই এই নির্বাচন কমিশনার আমার কাছ থেকে তার গালে কিস চেয়েচছিলেন। তিনি এতটায় অভদ্র যে নির্বাচনের দিন তিনি এক পক্ষকে শুধু সাপোর্ট দিয়েছেন।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ নির্বাচন নিয়ে অনেক অভিযোগের মধ্যে এই অভিযোগটিও করেন। এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তার দুই গালে দুইটা চড় মারা উচিত ছিল।
সংবাদ সম্মেলন নিপুণ আরও বলেন, এই চেয়ারে যে কি আছে তার জন্য এত রাজনীতি কেন? এসব আসলে কী। নির্বাচনের যে নিয়ম ছিল তা হয়নি, কিন্তু কেন করা হয়নি তারও প্রশ্নের উত্তর চাই। সবশেষ নিপুণ দাবি করেন, টাকা দিয়ে ভোট কেনার পরও কেন এই পদটির জন্য নির্বাচন দেওয়া হবে না? নির্বাচন কমিশনার আপেক্ষিকভাবে এক পক্ষকে জেতানোর জন্য কাজ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে জায়েদ খান, এফডিসির এমডি, আর নির্বাচন কমিশনার পীরজদা হারুন একটা চক্র। তারা সবাই মিলে জায়েদ খানকে জিতিয়ে দিয়েছে। তারা টাকা দিয়ে ভোট কিনেছে ভিডিওতে সেটা দেখা গেছে।’
নিপুণ আরও বলেন, ‘আমি আবার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে শুধু সাধারণ সম্পাদকের ভোট চাই। অন্যপদের নির্বাচন চাচ্ছি না। আমি সবকিছুর জন্য উচ্চ আদালতে যাব। আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এই নিয়ম আছে শুধু এক পদের ভোট হওয়া।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক পদে পার্থী হয়েছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তিনি পেয়েছিলেন ১৬৩ ভোট। অপরদিকে ১৭৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন জায়েদ খান। নির্বাচনের ফলাফল মানতে নারাজ এই নায়িকা। এ নিয়ে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) আপিল করেন নিপুণ।
কেন আপিল করেছেন জানতে চইলে নিপুণ বলেন, আমার ১৬টি ভোট নষ্ট হয় কিভাবে? এই ভোটগুলো পেলেও আমি ২ ভোটে জিতে যাব। এছাড়া প্রশাসনও আমাদের অসহযোগিতা করেছে।
নিপুণের আপিলের প্রেক্ষিতে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সাধারণ সম্পাদক পদের ব্যালট পেপার পুনঃগণনা করা হয়। তাতেও হেরে যান নিপুণ। আপিল ভোটের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান সময় সংবাদকে বলেন, ফলাফল আগেরটাই আছে। নিপুণকে আমরা বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।
এদিকে শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এবার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। এছাড়া সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মিশা-জায়েদ প্যানেলের ডিপজল ও রুবেল। তারা পেয়েছেন যথাক্রমে ১৯১ ও ২১৯ ভোট। কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের দুই সহসভাপতি প্রার্থী ডি এ তায়েব পেয়েছেন ১১২ ভোট, রিয়াজ পেয়েছেন ১৫৬ ভোট।
ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় ভোট বর্জন করেছেন ডি এ তায়েব। সহসাধারণ সম্পাদক পদে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সাইমন সাদিক জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২১২ ভোট। ২০৩ ভোট পেয়ে সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন মামনুন ইমন। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জয় চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ২০৫ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শাহনূর। আলেকজান্ডার বোকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শাহনূর পেয়েছেন ১৮৪ ভোট। দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জয় লাভ করেছেন আরমান। তিনি পেয়েছেন ২৩২ ভোট। ১৯৩ ভোট পেয়ে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন আজাদ খান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফরহাদ পেয়েছেন ১৪৬ ভোট।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ, আফজাল শরীফ সাইমন, জেসমিনসহ অনেকেই।